October 30, 2024, 10:15 pm
জহির রায়হান সোহাগ, চুয়াডাঙ্গা/
কয়েকবার আপত্তি, চলতি বছরে মূল্য বৃদ্ধির দাবিতে দুইবার আন্দোলন। তাতেও মেলেনি সুফল। অবশেষে বিএডিসির কাছে বোরো ধান বীজ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে চুয়াডাঙ্গার চুক্তিবদ্ধ চাষীরা। প্রতি কেজি ধান বীজের মূল্য ৪৫ টাকা নির্ধারণের দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বীজ সরবরাহ বন্ধ করে দেয় তারা। এতে দেখা দিয়েছে বিএডিসির বীজ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র ও বীজ ভবনসহ চারটি প্রতিষ্ঠানে অনেকটাই অচলাবস্থা। প্রধান সরবরাহকারী কৃষক এনামুল হক লোটাস বলছেন, আশ্বাসে আর কাজ হবে না। এবার ৪৫ টাকাই দিতে হবে বীজের দাম। তানাহলে বাইরে বীজ বিক্রি করা হবে। এদিকে, বীজ সংগ্রহ প্রক্রিয়া দেরি হলে বীজের মান ধরে রাখা নিয়েও দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বিএডিসি কর্তৃক আমন ধান বীজ সংগ্রহ মূল্য নূন্যতম ৪৫ টাকা নির্ধারণের দাবিতে চুয়াডাঙ্গা দৌলতদিয়াড়ের বিএডিসি খাদ্য গুদামের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করে চুক্তিবদ্ধ চাষীরা। মানববন্ধনে অংশ নেন ৩ শতাধিক কৃষক।
মানবন্ধনে বিএডিসির চুক্তিবদ্ধ চাষীদের নেতারা দাবি করেন, আমার গ্রামের প্রান্তিক পর্যায়ের বিএডিসি’র চুক্তিবদ্ধ চাষী। নিয়মনীতি মেনে সাধারণ চাষীদের থেকেও অতিরিক্ত সময় ও অর্থ ব্যয় করে বিভিন্ন প্রকার বীজ উৎপাদন করে থাকি। যথাসময়ে বিএডিসি’র কাছে সরবরাহও করি। কিন্তু করোনাকালীন সময়ে সরকার কৃষকদের বিভিন্নভাবে প্রণোদনা দিলেও আমরা পায়নি। বর্তমান বাজার দর তুলনায় বিএডিসি কর্তৃক ধান বীজের সংগ্রহ মূল্য নিতান্তই কম। এতে চাষীরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে। বীজ বিএডিসি’র কেন্দ্রে দেয়ার ৪-৬ মাস পর মূল্য পরিশোধ করা হয়। তাই করোনা পরিস্থিতিসহ সার্বিক বিবেচনায় ধান বীজের সংগ্রহ মূল্য নূন্যতম কেজি প্রতি ৪৫ টাকা নির্ধারণ করার দাবি জানাচ্ছি। অবিলম্বে দাবি মেনে না নিলে কঠোর কর্মসূচি দেয়ারও হুঁশিয়ারী দেন নেতারা।
ওইদিন আন্দোলন শেষে বিএডিসি চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি দেন কৃষকরা। অনুলিপি দেয়া হয় কৃষি মন্ত্রী, সচিব, বিএডিসির সদস্য পরিচালক (বীজ ও উদ্যান), বিএডিসির মহা ব্যবস্থাপক (বীজ), চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে।
একাধিকবার আন্দোলন করেও যখন কোন লাভ হয়নি তাই আজ বৃহস্পতিবার থেকে ধান বীজ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে চাষীরা।
বিএডিসির চুক্তিবদ্ধ চাষী সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি এনামুল হক লোটাস জানান, এক কেজি ধান থেকে সকল প্রক্রিয়া শেষে ৭০০ গ্রাম বীজ পাওয়া যায়। এবছর বৈরী আবহাওয়ার কারণে প্রতি কেজি বীজ ধান উৎপাদন করতেই ৪৫ টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে। তাই ৪৫ টাকার নিচে মূল্য নির্ধারণ করলে বীজ সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। প্রয়োজনে বীজ বাইরে বিক্রি করা হবে।
চুয়াডাঙ্গা বিএডিসির যুগ্ম পরিচালক সেলিম হায়দার জানান, চুক্তিবদ্ধ চাষীরা মৌখিকভাবে বিষয়টি জানানোর পর তা বিএডিসির উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদেরকে অবগত করা হয়েছে। চাষীদের কাছ থেকে বীজ সংগ্রহ প্রক্রিয়া দেরি হলে বীজের মান ধরে রাখা যাবে না।
Leave a Reply